বাংলাদেশে স্ট্রোক (Stroke) একটি সচরাচর ও মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। এই গাইডলাইনে আপনি স্ট্রোকের কারণ, ঝুঁকি ফ্যাক্টর, প্রাথমিক লক্ষণ, ডায়াগনসিস পদ্ধতি, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন। স্ট্রোকের সঠিক সময়ে শনাক্তকরণ ও দ্রুত চিকিৎসা জীবন বাঁচাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি বা আপনার পরিবারের কারও মধ্যে স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করুন। এই গাইডলাইনটি আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি ও সঠিক করণীয় নির্ধারণে সহায়ক হবে।
স্ট্রোক হল মস্তিষ্কে রক্তস্রোত ব্যাহত হওয়ার ফলে স্নায়ুতন্ত্রের টিস্যু নষ্ট হওয়া—এতে হঠাৎ অক্ষমতা, অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি হয়। বাংলাদেশে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে স্ট্রোক শীর্ষস্থানীয়,এক বছরে গড়ে প্রতি ১,০০,০০০ মানুষের মধ্যে প্রায় ৫৫ জন মারা যায়।; এটি শরীরিক সক্ষমতা ও জীবনের উপর বড় প্রভাব ফেলে। বয়সের সাথে এর ঝুঁকি বাড়ে; কিন্তু বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে কিছু তরুণ স্ট্রোক কেসও রিপোর্ট হচ্ছে। ।
প্রধান ঝুঁকিগুলো: উচ্চ রক্তচাপ(~৭০-৮০%), ধূমপান, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল ইত্যাদি। স্বাস্থ্যসেবা চ্যালেঞ্জ:দেশে দ্রুত ইমার্জেন্সি স্ট্রোক সেবা এবং পর্যাপ্ত স্ট্রোক-ইউনিটের অভাব রয়েছে — ফলে সময়মতো যত্নের অভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ে।
স্ট্রোক কেন হয়?(Cause) স্ট্রোক দুই প্রধান ধরনের — ইসকেমিক (রক্তনালি বাধা) এবং হেমোর্রেজিক (মস্তিষ্কের ভিতরে রক্তপাত)। প্রধান ঝুঁকি বাহক (modifiable & non-modifiable) উচ্চ রক্তচাপ (Hypertension) — সবথেকে বেশি ঝুঁকি; বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ব্যাপক। ডায়াবেটিস (Diabetes mellitus)। ধূমপান ও তামাক ব্যবহার (সিগারেট ও স্থানীয় তামাক)। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য → উচ্চ কোলেস্টেরল / অস্বাস্থ্যকর ওজন (obesity)। ফিজিক্যাল ইনঅ্যাকটিভিটি এবং অ্যালকোহল অতিরিক্ত সেবন। বয়স (বৃদ্ধা), পরিবারে স্ট্রোক/হার্ট ডিজিসের ইতিহাস (non-modifiable)। পেশাগত/জীবনধারার নির্দিষ্ট কারণে তরুণদের মধ্যে কিছু বিরল ঝুঁকি (কথিতভাবে নির্দিষ্ট ভাস্কুলার এবনরমাল, মিডিকেশন, গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত), দেশে এমন কেস-রিপোর্টও আছে।
স্ট্রোক হলে দ্রুত (হঠাৎ) শুরু হয় — FAST নিয়মটি সবাইর জানা উচিত: F — Face: মুখের এক পার্শ্ব লাটকা/অসাম্য (এক পাশে পড়ে যাওয়া)। A — Arms: এক হাত বা পা অথবা উভয় শক্ত,দুর্বলতা/উত্তোলন করতে অক্ষম। S — Speech: আস্ফুট বা জিজ্ঞাসা করলে অস্পষ্ট কথা বলা/বুঝতে না পারা। T — Time: উপরের লক্ষণ দেখা দিলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত হাসপাতালে নিন। অন্যান্য লক্ষণ: হঠাৎ তীক্ষ্ণ মাথাব্যথা (বিশেষ করে হেমোর্রেজিক ক্ষেত্রে), দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা বা এক পাশে অন্ধত্ব, চলাচলে ভারসাম্য হারানো, ঘোর ভাব।